পুলিশ সদস্যকে মারধরের মামলায় গ্রেপ্তার হয় মমিন শেখ
রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলার দৌলতদিয়া ঘাটে সরকারি কাজে বাধা ও কর্তব্যরত পুলিশ সদস্যকে মারপিটের মামলায় গ্রেপ্তার হয়েছিল রাজবাড়ী জেলা ছাত্রলীগের সহসভাপতি মমিন শেখ।
কিছুদিন পর জামিনে জেল থেকে বেরিয়ে এসে আবারও সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করতে মরিয়া হয়ে উঠেছে।
সরকারি কাজে বাধা দেওয়ার পাশাপাশি উদ্দেশ্য প্রণোদিত ও পরিকল্পিত ভাবে পুলিশের ভাবমূতি ক্ষুন্নসহ জনমনে সরকার বিরোধী মনোভাব সৃষ্টির লক্ষ্যে অনলাইনে ভুয়া, বানোয়াট ও মনগড়া সংবাদ প্রচার করে যাচ্ছে।
পুলিশের এক গোপন প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের শাসনামলে আইনের শাসন উপেক্ষা করে সব ধরণের অনিয়ম দুর্নীতির সঙ্গে জড়িয়ে পড়ে মমিন।
রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলার দৌলতদিয়া ঘাটে সিরিয়াল উপেক্ষা করে ফেরিতে গাড়ি তুলে দেওয়ার মাধ্যমে প্রতিরাতে বিপুল পরিমান অর্থ হাতিয়ে নিত ট্রাক চালকদের কাছ থেকে।
এধরনের কর্মকান্ড পুলিশ দীর্ঘদিন পর্যবেক্ষণ করেন এবং সিরিয়াল ভেঙে ট্রাক ফেরিতে তুলতে বাধা দেন। তাতে ক্ষিপ্ত হয়ে মমিন ঘাটে কর্তব্যরত পুলিশ সদস্য মীর ইয়াছিন আলীকে বেদম মারপিট করেন।
এঘটনায় ভুক্তভোগী পুলিশ সদস্য ২০২০ সালের ২০ অক্টোবর গোয়ালন্দ ঘাট থানায় মমিন শেখের বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করেন। ওই মামলা মমিনকে গ্রেপ্তার করেছিল পুলিশ। জামিনে বেরিয়ে আবারো সরকার বিরোধী কর্মকান্ডে সক্রিয় হয়েছে।
পুলিশের গোপন প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রাজবাড়ী জেলা ছাত্রলীগের সহসভাপতি থাকাকালীন ক্ষমতার অপব্যবহার করে সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে দৌলতদিয়া ঘাটে ফেরিতে মালবাহি ট্রাক পারাপারের দালালী করতেন মমিন শেখ।
দৌলতদিয়া ঘাটের পুর্ব পাড়ায় পতিতালয়ে অপ্রাপ্ত বয়স্ক মেয়েদের দিয়ে জোর পুর্বক দেহ ব্যবসা করাতেন। পতিতালয়ে যৌথ মালিকানায় তার তিনটি বাড়ি রয়েছে বলে প্রতিবেদনে উঠে এসেছে।
প্রতিবেদনে আরো বলা হয়েছে, সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করার সর্বশেষ উদাহরণ চুরির গরু ছাড়িয়ে নেওয়ার চেষ্টা।
রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলার ওমর আলী মোল্লা পাড়ার হামেদ শেখ (মমিন শেখের বাবা) চোরাই গরু ব্যবসায়ী গাজী হাওলাদার ওরফে কসাই গাজীর ব্যবসায়ীক পার্টনার।
সম্প্রতি কসাই গাজীর বাড়ি থেকে চোরাই সন্দেহে ১০টি গরু উদ্ধার করে গোয়ালন্দ ঘাট থানা পুলিশ। মমিন সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে উক্ত গরু ছাড়িয়ে আনার চেষ্টা করে।
পুলিশ যাচাই বাছাই করে উক্ত গরু প্রকৃত মালিকের কাছে হস্তান্তর করে। কসাই গাজী ও তার তিন ছেলের বিরুদ্ধে রাজবাড়ী ও মানিকগঞ্জে একাধিক গরু চুরির মামলা রয়েছে বলে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের নেতা মমিন শেখ আওয়ামী রাজনীতির সঙ্গে জড়িত থাকায় গরু উদ্ধার করে প্রকৃত মালিকদের কাছে হস্তান্তরের বিষয়টি ভিন্নখাতে প্রবাহের চেষ্টা করে।
উদ্দেশ্য প্রণোদিত ও পরিকল্পিত ভাবে পুলিশের ভাবমূতি ক্ষুন্নসহ জনমনে সরকার বিরোধী মনোভাব সৃষ্টির লক্ষ্যে অনলাইনে একটি ভুয়া, বানোয়াট ও মনগড়া ভিডিও প্রচার করে।
মমিন শেখ আওয়ামী মতাদর্শী হওয়ায় সুপরিকল্পিত ভাবে বর্তমান সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করার লক্ষ্যে ৫ আগস্টের পর থেকে বিভ্রান্তিমূলক নেতিবাচক সংবাদ প্রচার করে আসছে।
এবিষয়ে মমিন শেখের বক্তব্য জানার জন্য তার মোবাইল ফোনে বারবার কল করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি।